সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৭:১১ অপরাহ্ন

অক্টোবরের আগেই জ্বালানি আনার পরিকল্পনা

অক্টোবরের আগেই জ্বালানি আনার পরিকল্পনা

স্বদেশ ডেস্ক:

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রথম ব্যাচের পারমাণবিক জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) উৎপাদন প্রস্তুতি সনদ সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়েছে। এর মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের অগ্রযাত্রায় নতুন মাইলফলক যুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আগামী অক্টোবরে এই জ্বালানি দেশে পৌঁছানোর কথা থাকলেও তার আগেই এটি আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

রাশান ফেডারেশনের সাইবেরিয়ান অঞ্চলের রাজধানী নভোসিভিরসে গত শুক্রবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংস্থা রোসাটমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান টিভিএল (ঞঠঊখ)-এর দপ্তরে বাংলাদেশের পক্ষে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক পরমাণু বিজ্ঞানী ড. মো. শৌকত আকবর এবং রাশান ফেডারেশনের পক্ষে এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট এ ভি ডায়েরি এ প্রটোকলে স্বাক্ষর করেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ান ফেডারেশনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান, প্রকল্পের উপ-পরিচালক ড. জাহেদুল হাছান, প্রকল্পের অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান অলক চক্রবর্তী, নিউক্লিয়ার কাউন্সিলর শুভাশিস সর্দার।

প্রকল্প পরিচালক জানান, ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত সাধারণ চুক্তি অনুযায়ী রুশ সরকার নির্ধারিত চুক্তির অংশ হিসেবেই আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তা দেবে। বাণিজ্যিক উৎপাদনের প্রথম দিন হতে পরবর্তী তিন বছর আলাদা করে জ্বালানির জন্য অর্থ পরিশোধ করতে হবে না। উভয়ের মধ্যে এই প্রটোকল ও রেডিনেস সনদ স্বাক্ষরের ফলে আন্তর্জাতিক বিধিবিধান ও আইএইএ গাইড লাইন এবং রেগুলেটরি রিকয়ারমেন্ট অনুযায়ী ফুয়েল উৎপাদনে আর কোনো প্রতিবন্ধকতা রইল না। রাশিয়ার একটি সূত্র জানায়, সবকিছু ঠিক থাকলে নির্ধারিত সময়ের আগেই পারমাণবিক জ্বালানি ইউরেনিয়াম দেশে আসার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পারমাণবিক এই জ্বালানি আমদানি ও সংরক্ষণ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নিউক্লিয়ার ক্লাবে যুক্ত হবে। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে উৎপাদন শুরু করতে আর কোনো বড় ধরনের চ্যালেঞ্জও থাকবে না। আইএইএর নির্দেশনা মেনেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি আমদানি, পরিবহন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। সূত্রমতে, স্পর্শকাতর এ জ্বালানি আমদানি, পরিবহন ও

সংরক্ষণের জন্য আইএইএর অনুমোদন ও লাইসেন্সের পাশাপাশি রাশান ফেডারেশনের রপ্তানি নীতির আলোকে তাদের অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জ্বালানি আমদানি করে তা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পাঠানো হবে। এ জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সহ সম্পৃক্ত থাকবে আরও অনেক মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর। নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে গোয়েন্দা তৎপরতা থাকবে।

পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে পদ্মা নদীর পাড়ে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ প্রকল্পটি দেশের ইতিহাসে এককভাবে সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ প্রকল্পে রাশিয়া ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দেবে এবং বাংলাদেশ সরকার দেবে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরমাণু শক্তি কমিশন বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের জেনারেল ডিজাইনার ও কন্ট্রাক্টর রাশিয়ার রোসাটম করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা। এ বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুটি ইউনিটে থাকছে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর রিঅ্যাক্টর, যেগুলো সব আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা পূরণে সক্ষম। প্রকল্পের নির্মাণকাজ তিন ভাগ শেষ হয়েছে। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে ২০২৪ সালে এবং পরের বছর দ্বিতীয় ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট করে মোট ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার কথা রয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877